1. »
  2. রাজনীতি

নারী ও শিশু কল্যাণে বিএনপির পরিকল্পনা জানালেন তারেক রহমান

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:২৩ এএম | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:২৮ এএম

নারী ও শিশু কল্যাণে বিএনপির পরিকল্পনা জানালেন তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের শ্রমজীবী নারী ও শিশুদের সম্ভাব্য উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের উৎপাদনশীলতা ও আগ্রগতি নিয়ে বিএনপির দীর্ঘস্থায়ী ও বাস্তবিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। 

আজ বৃহষ্পতিবার (৩০ অক্টোবর) তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ পরিকল্পনা জানান তিনি।

তারেক রহমানের পোষ্টটি তুলে ধরা হলো:
যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন কী হয়? বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা এবং অগ্রগতি।

বিএনপির লক্ষ্য সহজ: এমন একটি আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গড়া- যেখানে কোনো নারীকে তার পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে যে কোন একটি কে বেছে নিতে না হয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম: মোট পুরুষদের ৮০ শতাংশের বিপরীতে মোট 

নারীদের মাত্র ৪৩ শতাংশ কর্মজীবী। এই ব্যবধান আমাদের সতর্ক করছে যে আমরা আমাদের জাতির অর্ধেকেরও বেশি মেধা ও দক্ষতাকে পিছনে ফেলে যাচ্ছি।

এই কারণেই বিএনপি সারাদেশে এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে, যাতে শিশু পরিচর্যা (childcare) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ হয়।

আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে:
• সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন;
• সরকারি অফিসগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ;
• বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা;
• যেসব নিয়োগকর্তা শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখবে তাদের জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর (CSR) ক্রেডিট প্রদান; এবং
• নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান।
এই একটি সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা দিতে পারে, এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে পারে।

যেহেতু তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। 

ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (IFC) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO)-এর গবেষণায় দেখা গেছে- যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম, এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ তুলে আনতে পারে।

শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ। সড়ক যেমন বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।

আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট: ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যা লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে- যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী, গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।

আমরা এমন যে কোন পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সংগত নয়; এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি।

আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি- যেখানে প্রতিটি কর্মজীবী মা ও প্রতিটি ছাত্রী নিজের সাফল্যের স্বাধীনতা পায়, এবং যেখানে সমাজের যত্ন ও সহযোগিতাকে অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।