1. »
  2. রাজনীতি
বিবিসি বাংলাকে তারেক রহমান

'ভারত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে মানুষের বিরাগভাজন হলে আমাদের কিছু করার নাই'

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:১১ এএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:১১ এএম

'ভারত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে মানুষের বিরাগভাজন হলে আমাদের কিছু করার নাই'

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যু্ক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল সোমবার সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব গতকাল সোমবার প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর কোনো গণমাধ্যমকে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তারেক রহমান। 

তারেক রহমান বলেছেন, ভারত যদি বাংলাদেশের স্বৈরাচারী সরকারকে আশ্রয় দিয়ে দেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়ে পড়ে, তাতে বিএনপির কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণই ইতিমধ্যে সেই সম্পর্ক নিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে, আর তিনি থাকবেন দেশের মানুষের পক্ষেই।

বিবিসি বাংলা: বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে যেই সম্পর্ক ছিল, সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। তো ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আপনাদের নীতি কী হবে?

তারেক রহমান: আমার মনে হয়, আপনি একটু আগে যে প্রশ্নগুলো করেছেন, সেখানে বোধহয় আমি ক্লিয়ার করেছি পুরো ব্যাপারটা। সবার আগে বাংলাদেশ। এখানে তো আপনি পার্টিকুলার (সুনির্দিষ্ট) একটি দেশের কথা বলেছেন।

এখানে ওই দেশ বা অন্য দেশ তো বিষয় না। বিষয় তো হচ্ছে, ভাই বাংলাদেশ আমার কাছে আমার স্বার্থ, আমি আগে আমার দেশের মানুষের স্বার্থ দেখব, আমার দেশের স্বার্থ দেখব। ওটাকে আমি রেখে আপহোল্ড করে আমি যা যা করতে পারব, আমি তাই করব।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির নীতির কেন্দ্রবিন্দু হবে ‘বাংলাদেশের স্বার্থ’। কোনো বিদেশি শক্তির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জনগণের স্বার্থই হবে প্রধান বিবেচ্য।

বিবিসি বাংলা: বাংলাদেশের স্বার্থ আপনারা সবার আগে নেবেন, সেটা আপনি পরিষ্কার করেছেন। ভারতের কথা বিশেষভাবে আসছে যেহেতু সেটি বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ এবং বাংলাদেশের তিন পাশেই এই দেশটির সীমান্ত রয়েছে। এবং এটি নিয়ে আপনিও জানেন যে, বিভিন্ন সময়ে কথা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সময় তো সম্পর্ক নিয়ে বললামই সেটা নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত বা কেমন থাকা প্রয়োজন- এ নিয়ে আপনার চিন্তা কি?

তারেক রহমান: অবশ্যই আমি আমার পানির হিস্যা চাই। অবশ্যই আমি দেখতে চাইনা না যে, আরেক ফেলানী ঝুলে আছে। অবশ্যই আমরা এটা মেনে নিব না।

বিবিসি বাংলা: বাংলাদেশের স্বার্থের প্রসঙ্গে আপনি বলছেন যে, পানির হিস্যা চাওয়া এবং সীমান্ত হত্যার বিষয়টি নিয়ে আপনারা সোচ্চার থাকবেন?

তারেক রহমান: না না, আমি উদাহরণ দিয়ে বললাম। দুটো উদাহরণ দিয়ে বুঝালাম আপনাকে, যে আমাদের স্ট্যান্ডটা কি হবে। আমরা আমাদের পানির হিস্যা চাই। অর্থাৎ আমার দেশের হিস্যা, মানুষের হিস্যা আমি চাই, হিসাব আমি চাই।

আমার যেটা ন্যায্য সেটা আমি চাই। অবশ্যই ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমি বুঝাতে চেয়েছি যে, আমার মানুষের উপরে আঘাত আসলে অবশ্যই সেই আঘাতকে এভাবে আমি মেনে নিব না।

বিবিসি বাংলা: একটা বিষয় যদি বলি, পাঁচই অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এবং আপনিও জানেন যে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে গেছেন এবং সেখানে আছেন। ভারতের সাথে একটা সম্পর্কের শীতলতা দেখা গেছে, গত এক বছর ধরে। যেমন ধরুন সেটি যাওয়া আসার ক্ষেত্রে ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা রকম, সেই ক্ষেত্রে কী কোন পরিবর্তন আপনার সরকারে আসলে হবে বা পরিবর্তনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন, এমন কোন চিন্তা কি আপনাদের আছে?

তারেক রহমান: এখন তারা যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, সেখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। এটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের সাথে শীতল থাকবে। সো, আমাকে আমার দেশের মানুষের সাথে থাকতে হবে।