1. »
  2. মতামত

বাংলাদেশের অভিভাবকের আসনে বেগম খালেদা জিয়া

রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৪৪ পিএম | আপডেট: রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৪৪ পিএম

বাংলাদেশের অভিভাবকের আসনে বেগম খালেদা জিয়া

১৫ ই আগস্ট ছিল বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮১ তম জন্মদিন । ১৯৪৫ সালের এই দিনে তিনি দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসন আমলে বিএনপি নেতা কর্মী ও সমর্থকরা মন খুলে তাদের প্রিয় নেত্রীর জন্মদিন পালন করতে পারেনি। ১৫ই আগস্ট জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশের হাজার হাজার নারী-পুরুষ- শিশুদের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি প্রযোজ্য ছিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে প্রকাশ্যে মন খুলে কেউই জন্মদিন পালন করতে পারেনি। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস - এখন ১৫ ই আগস্ট বাংলাদেশে কোন শোক দিবস পালন হয় না। বরং সারা বাংলাদেশে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ৮১ তম জন্মদিনের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের নয়ন-মনি, মমতাময়ী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। 

আমরা যদি একটু পেছনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই ১৯৮৪ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৭ সালে 'এরশাদ হটাও' এক দফার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া । তারই ফলশ্রুতিতে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে  ১৯৯১-৯৬ পর্যন্ত সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন।পরবর্তীতে তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করেন ।এছাড়াও তিনি দুইবার বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং সার্কের প্রথম নারী চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া একমাত্র নেতা যিনি পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে সব কয়টি আসনে জয় লাভের বিরল নজির স্থাপন করেছেন। তাইতো তাকে দেশনেত্রী বলা হয়। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য আপোষহীন নেতৃত্বের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় ভাবে বারবার গ্রেফতার করা হয়েছে । তবুও তিনি কখনো আপোষ করেননি। এজন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের জনগণ আপোষহীন নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক বেগম খালেদা জিয়াকে
 ' ফাইটার ফর ডেমোক্রেসি ' এবং 'মাদার অফ ডেমোক্রেসি' পদকে ভূষিত করা হয়।

গণতন্ত্রের মা ও আপোষহীন দেশনেত্রীর সাহস ,ত্যাগ ও নেতৃত্ব বাংলাদেশের ইতিহাসের চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়ার ত্যাগ তাকে জাতির অভিভাবকের আসনে বসিয়েছে। তাইতো জন্মদিনে ফুলের তোড়া পাঠিয়ে খালেদা জিয়াকে  শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন 'শুভ জন্মদিন বাংলাদেশের অভিভাবক বেগম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশকে যিনি নিজের অস্তিত্বে ধারণ করেছেন, আর দেশও যাকে আপন করে নিয়েছে সীমাহীন ভালোবাসায়।' এই মহান নেত্রীর ৮১ তম জন্মদিন উপলক্ষে জিয়া শিশু  একাডেমী প্রযোজিত গানে সুর ও সঙ্গীতায়ন করেছেন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী সফি মন্ডল। এই গানে কন্ঠ দিয়েছে জিয়া শিশু একাডেমি ও শাপলা কুড়ি থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু শিল্পীরা। বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী নাসিরও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে গান লিখেছেন এবং কন্ঠ দিয়েছেন।

কিছুদিন আগে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে যখন বিভিন্ন দলের নেতাদের মধ্যে অনৈক্য এবং বিভাজন দেখা দিয়েছিল সেই সময়ে জাতির অভিভাবকের ন্যায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া  সবাইকে সবকিছু আলোচনার টেবিলে বসে সমাধান করার জন্য বলেন। দেশনেত্রীর নির্দেশনার পরে মুহুর্তেই প্রেক্ষাপট বদলে যায়। সবার মধ্যে পুনরায় ঐক্য ফিরে আসে। দেশের জনগণ  এই মহান নেত্রীর ৮১ তম জন্মদিনে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছে তার দীর্ঘায়ু কামনা করে যেন তিনি আরো কিছুদিন এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারেন।

লেখক-ফেলো, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ।