1. »
  2. রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, রোডম্যাপ চেয়েছিলাম : সালাউদ্দিন আহমেদ

শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫ ০৯:০০ পিএম | আপডেট: শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫ ০৯:০০ পিএম

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, রোডম্যাপ চেয়েছিলাম : সালাউদ্দিন আহমেদ

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, রোডম্যাপ চেয়েছিলাম এমন মন্তব্য করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, "আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, এখন পর্যন্ত চাচ্ছি না। আমরা গণতন্ত্র চাই এবং সাংবিধানিক অধিকার চাই। আর সেজন্যই আমরা বারবার নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছি। আর এটা আমাদের দায়িত্ব। আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার (ড. ইউনূস) পদত্যাগ চাইনি। এমনকি এখনো পর্যন্ত চাচ্ছি না। কিন্তু উনার কাছে আমরা একটা রোডম্যাপ দাবি করেছিলাম।"

আজ শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর ডিপ্লমা ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে 'শাপলা চত্বরে: শাহদতের রক্তে রাঙ্গা অবিনাশী চেতনা' শীর্ষক কনফারেন্সে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, "আমরা বিভিন্নভাবে বুঝতে পারছি যে এই সরকারকে নানাভাবে ভুল বুঝানো হচ্ছে আমাদের বিষয়ে যে, আমরা এই সরকারকে কাজ করতে দিতে চাচ্ছি না। এটা সঠিক নয়। আমরা বলেছি এদেশের সেনাবাহিনী কে যেন বিতর্কিত না করা হয়। আমরা বলেছি এদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে যেন কোন প্রকার ছেলে খেলা না করা হয়। এ দেশের নিরাপত্তা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যেকোনো বিষয়ে যেন জাতীয় ঐক্যমন্ত্রীর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এই কথাগুলোই আমরা জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে বলেছি।"

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, "শাপলা চত্বরে যে গণহত্যা হয়েছিল সে দিন আমি আর মাহমুদূর রহমান ভাই দুইজনই জেলে ছিলাম। সেদিন দুজনই পিজি হাসপাতালে ছিলাম। সে সময় মাহমুদুর রহমান ভাই সাত দিন যাবত অনশন করছিলেন। আমি তখন ভাইকে বলেছিলাম অনশন করে লাভ নেই, আপনি মারা গেলে হাসিনা খুশি হবে। কোন সময় জেলখানায় কোন সময় আয়না ঘরে আবার কোন সময় মৃত্যু গহব্বরে আমার নিজেরই সময় কেটেছে দীর্ঘ ১৬ টা বছর। শাপলা চত্বরে শহীদদের বিচার দেখার জন্য আল্লাহ যেন আমাকে অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখে।"

তিনি বলেন, "আমি হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দদের বলতে চাই আপনারা এখন পর্যন্ত একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা করতে পারলেন না শহীদদের। শাপলা চত্বরে শহীদদের তালিকা হেফাজতের পক্ষ থেকে কেন করছেন না। প্রতিটি শহীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা আপনারা নিজেরা করুন, আর সেখানে প্রত্যেক শহীদের নাম ছবিসহ যেন উল্লেখ করা থাকে। তাহলেই এদেশের মানুষ তাদের চিরকাল স্মরণ করবে।"

তিনি বলেন, "শেখ হাসিনা এমন জঘন্য হত্যাকারী যে সে রাতের অন্ধকারে সমস্ত আলো পানি নিভিয়ে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এত পরিমাণ নিরীহ আলেমদের হত্যা করল তারপরও ফেসিস্ট হাসিনা তাদেরকে নিয়ে তার আমলে তামাশা করে গেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাজনৈতিক এবং দলীয় সিদ্ধান্তে এ সকল হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। আসমান থেকে হেলিকপ্টার দিয়ে এদেশের নিরিহ শিশু নারী সহ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে খুনি হাসিনা।"

তিনি আরো বলেন, "এরপরও বাংলাদেশের সকল হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) নূন্যতম অনুসুচনা বোধ করে না। দোষ শিকার করেন ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু এসব না করে উলটো এদেশের কোন গণঅভুত্থানকারীদের তারা দোষী বলে দাবি করছেন।"

তিনি বলেন, "আমরা এখন যেই অবস্থায় আছি তাতে যদি আমরা সকল শহীদদের বিচার চাই তাহলে এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মত আরো ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। তানাহলে দ্রুত এই বিচার কার্য সম্পন্ন করা যাবে না। তবে বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত কোন বিচার কার্য দৃশ্যমান নয়। তবে আমরা আশা করব, বিচার কার্য যেহেতু সময় সাপেক্ষ তবুও খুনি হাসিনার আমলে সংগঠিত একটি মামলা হলেও যেন বিচার কার্য শেষ হয়েছে এটা যেন আমরা দেখে যেতে পারি।"

এসময় উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা বশিরউল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো দিদারুল আহমেদ, মাওলানা রুহুল আমিন সালেহ, গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নূর সহ শাপলা চত্বরের হত্যাকান্ডে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যরা।