1. »
  2. রাজনীতি

দেশে জাতীয় নির্বাচন ও ঐক্য বিনষ্টের চক্রান্ত চলছে : তারেক রহমান

বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ০২:৫৮ পিএম | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ০৩:২১ পিএম

দেশে জাতীয় নির্বাচন ও ঐক্য বিনষ্টের চক্রান্ত চলছে : তারেক রহমান

দেশের মানুষের গণতন্ত্রের স্বপ্নকে নষ্ট করতে জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত এবং এটি ধ্বংসের অপচেষ্টা চলছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভায় উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি এসব কথা বলেন।

এ চক্রান্ত থেকে বাঁচতে দেশের সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি। 

ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশের মানুষ গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখছে কিন্ত জাতীয় ঐক্য ও জাতীয় নির্বাচন বিনষ্টের চক্রান্ত-অপচেষ্টা চলছে। এ চক্রান্ত থেকে বাঁচতে দেশের সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্ববান জানান তারেক রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, "গণহত্যার দোসরদের পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। আবিলম্বে আগামী দিনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। ইতোমধ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য সতর্কতা অনলম্বনের অনুরোধ জানাই।" 

তিনি আরও বলেন,  "যারা বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সংস্কার বা স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে।"

তারেক রহমান বলেন, "বিএনপির ৩১ দফার সাথে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ইস্যুতে বেশি মৌলিক বিরোধ নেই। বিভিন্ন সময় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইতিবাচক বক্তব্য দিলেও অনেক উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য জনগণের জন্য হতাশা সৃষ্টি করেছে।"

তিনি বলেন, "বর্তমানে দেশে খুন,ধর্ষণ,চুরি-ছিনতাই বেড়েই চলছে। বাজার সিন্ডিকেটে নিত্য-পন্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সেখানে  জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দেয়ার মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করছে এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।"

সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, "বিএনপির কাছে সংস্কার কোনো নতুন কিছু নয়। যখন সুযোগ পেয়েছে তখনই সংস্কার করেছে। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন, ১৯৯১ সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা, বিনাবেতনে মেয়েদের শিক্ষা, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ছিল বিএনপির যুগান্তকারী সংস্কার। এবারও অনেক আগেই বিএনপির সংস্কারের লক্ষ্যে ৩১দফা দিয়েছে। এটিই শেষ নয়, প্রয়োজনে এ দফাগুলোর  সংযোজন-বিয়োজন করা হবে।" 

তিনি বলেন, "বিগত দিনে ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে সকল সংস্কারের পথ বন্ধ করে দিয়ে দেশের শিক্ষা-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। টাকা পাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে দিয়েছে। আগামীতে জনগণের রায়ে বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে গণহত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠন করতে বিএনপি বদ্ধপরিকর। কারণ, জনগণ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান উৎস।"

হাসিনা পালানোর পর অনেকগুলো রাজনৈতিক দল এসেছে। বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাসী বিএনপি সকল দলকে স্বাগত জানায়। সেই সাথে দেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, "পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। আমাদের নীতি হবে সাবার আগে বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্বে শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই। একটি দেশের সাথে সম্পর্ক হবে ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে।" 

বিএনপি নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "আমাদের সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।  বক্তব্য দেওয়ার সময় ব্যক্তিগত বিরোধকে এড়িয়ে যেতে হবে। আলোচনা-সমালোচনা নিজেদের মধ্যের ঐক্য যেনো বিনষ্ট না করে। নেতাদের নামের ক্ষেত্রে প্রশংসামূলক শব্দ ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।"

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের একটি কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। যারা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন, দলের ইমেজ ক্ষুণ্ণ করবেন, ব্যক্তির চেয়ে দলকে প্রাধান্য দিয়ে আমাকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে ও নিতে হবে। অনৈতিক কোনো কাজকে বিএনপি প্রশ্রয় দেয় না, দিবে না।"

উল্লেখ্য, বিএনপির সর্বশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর আর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নির্যাতনের জন্য কোনো বর্ধিত সভার আয়োজন বিএনপি করতে পারেনি। তার আগে ২০১৬ সালে বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।