আজও রাজধানীর সড়কে বাস সংকট, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা
মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১০:৫৬ এএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১০:৫৬ এএম

রাজধানীতে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে টিকিট কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছেন গণপরিবহন শ্রমিকরা। ফলে গতকাল সোমবারের (১০ ফেব্রুয়ারি) মতো আজও বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ গণপরিবহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসের দেখা মিলছে না। আর কোথাও কোথাও বাসের দেখা মিললেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেখা যায়, রাজধানীর সায়েদাবাদ, মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা এলাকায় সড়কের পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন বহু মানুষ। দুই একটা বাসের দেখা মিললেও তাতে উঠার মতো পরিস্থিতি নেই। অনেকেই বাসের দেখা না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। আর যাদের সামর্থ্য আছে তারা রিকশা, সিএনজি বা রাইড শেয়ারের মাধ্যমে গন্তব্যে ছুটছেন।
তবে বাসের জন্য অপেক্ষারত অনেকেই জানেন না যে, আজ সড়কে বাস চলাচল করছে না। ফলে তারা দীর্ঘ সময় ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করে পড়েছেন ভোগান্তিতে। রাজধানীর ধোলাইপাড়ে রাইদা বাসের জন্য অপেক্ষারত এক যাত্রী জানেন না যে বাস চলাচল করছে না।
এই যাত্রীকে বাস না চলার কারণ জানাতে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। আরেক যাত্রী বলেন, ‘গুলিস্তান যামু, অনেকক্ষণ ধইরা দাঁড়াই আছি, যাও দু-একটা ভিক্টর ও আকাশ বাস আসতেছে উঠাই যাচ্ছে না।’
ভিক্টর বাসের চালক আবুল হাসেম বলেন, গোলাপি রং করতে গিয়ে অনেক বাসই নামেনি রাস্তায়। আর ই-টিকিটিংয়ে চালক-হেলপারের ক্ষতি হচ্ছে বলে অনেকে বাস চালাচ্ছেন না।
এর আগে, গতকাল সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সায়েদাবাদে বাস চালক-শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন আগের মতোই যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলার দাবিতে। এতে জনপথ থেকে সায়েদাবাদ টার্মিনাল পর্যন্ত সড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
কিন্তু চালক, শ্রমিকরা আগের মতো যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামার সুযোগ চান। তাদের ভাষ্য, এ সুযোগ না থাকায় আয় কমে গেছে। কাউন্টার মেনে চললে বেতন বাড়াতে হবে। এ দাবিতে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শ্রমিকরা সায়েদাবাদ এলাকায় জড়ো হন।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, যানজট নিরসন ও পরিবহন খাতে নৈরাজ্য রোধে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামার সুযোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। নিয়ম মেনেই চলতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তিনটি রুটের বাসে ই-টিকিটিং ও কাউন্টার পদ্ধতি চালু করা হয়। এ পদ্ধতিতে গোলাপি রঙের বাস কাউন্টার থেকে শুধু টিকিটধারী যাত্রীকে তুলবে। সড়ক পরিবহন আইনেও যত্রতত্র যাত্রী তোলা নিষিদ্ধ। এ নিয়ম ভঙ্গের সাজা হিসেবে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ছয় মাসে কারাদণ্ড রয়েছে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা ২১টি কোম্পানির বাস একক কোম্পানির অধীন পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এর আওতায় প্রায় ২ হাজার ৬১০টি বাস চলাচল করবে। বাসগুলোর রং হবে গোলাপি।
সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব বাস চলবে কাউন্টার–পদ্ধতিতে। যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যাতায়াত করতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া বাস দাঁড় করানো হবে না। যাত্রী ওঠানামাও করবে নির্দিষ্ট স্থানে। বাসে ওঠানামার জন্য ঢাকার বিভিন্ন অংশে থাকবে প্রায় ১০০টি স্টপেজ। তবে এখনো সব স্টপেজে কাউন্টার বসানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি।
আরও পড়ুন
- ন্যায্য হিস্যা আদায় : তিস্তা বাঁচানোর পদযাত্রায় জনস্রোত
- রাজধানীতে প্রকাশ্যে দা দিয়ে দম্পতিকে কোপানোর ভিডিও ভাইরাল, আটক ২
- সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে পুলিশের বাধা, জল কামান নিক্ষেপ
- রাজধানীর ইসলামবাগে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট
- দীর্ঘ ৮ বছর পর নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি, জেলেদের মাঝে উৎসব
- বিজিবির প্রতিবাদের পর কুড়িগ্রাম সীমান্তের সিসিটিভি ক্যামেরা সরাল বিএসএফ
- কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফির বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেয়ার অভিযোগ
- যৌথ বাহিনীর অভিযানে দেশজুড়ে একদিনে গ্রেপ্তার ১৭৭৫