1. »
  2. সমগ্র দেশ

ফেলানী হত্যার ১৪ বছর : আ'লীগ সরকারের কাছে বিচার না পাওয়ার আক্ষেপ পরিবারের

মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫ ১২:৩০ পিএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫ ১২:৩০ পিএম

ফেলানী হত্যার ১৪ বছর : আ'লীগ সরকারের কাছে বিচার না পাওয়ার আক্ষেপ পরিবারের

কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার চতুর্দশ বার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ১৪ বছর আগে এই দিনে ফেলানীকে গুলিতে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারে ঝুলে রাখে । 

এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে ফেলানীর মা বলেন আক্ষেপ করে জানান, আওয়ামী লীগ সকারের কাছে বার বার বিচার চেয়েও পাননি তিনি। হাসিনা সরকার বিভিন্ন সময় নানন প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কেউ তাদের খোঁজ নেইনি। এই নতুন সরকারের কাছে পরিবারের একটাই দাবি যেন আন্তর্জাতিক আদালতে তার মেয়ে হত্যার ন্যায্য বিচার পান।

সে সময় সীমান্তের কাঁটাতারে আটকে থাকা ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হৈচৈ ফেলে দেয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। 

ফেলানী হয়ে উঠে প্রতিবাদের প্রতীক। বিশ্ব মিডিয়ায় ফেলানী খাতুনের মরদেহ কাঁটাতারে ঝুলে থাকার ঝুলন্ত ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় ভারত হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেও প্রহসনের বিচার করা হয়।

২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের এই কোর্টে স্বাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামী অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফ এর বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনঃবিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে স্বাক্ষ্য দেন

ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত আত্মস্বীকৃত আসামী অমিয় ঘোষকে ফের খালাস দেন। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনা শুরুর আগে শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি এখন পর্যন্ত।

ফেলানীর মা গণোমাধ্যমে বলেন, ‘আগে যে সরকার ছিল, তারা অনেক আশা দিছে। আমার মেয়ে হত্যার বিচার করবে, আমাদের পরিবারের ভরণপোষণ দেবে, বাচ্চাকাচ্চা পড়াশোনা করলে চাকরি দেবে। কিন্তু আইজ পর্যন্ত সরকারের একজন লোকও আসে নাই, মেয়ে হত্যার বিচারটাও পাই নাই। এখন তো নতুন সরকার আসল। এখন যদি বিচারের ব্যবস্থাটা করে। আমি চাই, এই সরকার যেন আন্তর্জাতিক আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করে। এটাই এই সরকারের কাছে আমার দাবি।’

ফেলানী হত্যার পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন বিএসএফকে একটি ‘খুনি বাহিনী’ হিসেবে অভিহিত করে। বিশ্বজুড়ে প্রচার হয় প্রতিষ্ঠিত বিএসএফ একটি বর্বর বাহিনী। এই বাহিনী এর আগেও বহু নারী ও শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে একের পর এক সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ঘটলেও টুঁ শব্দটি করেনি শেখ হাসিনা সরকার। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর সীমান্ত হত্যা নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের কড়া সমালোচনা করলেও হত্যা বন্ধ হয়নি। ৫ আগস্টের পরও বিএসএফের হাতে সীমান্তে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।