দুর্ঘটনা কমেছে কর্মক্ষেত্রে: চলতি বছরে নিহত ৯০৫, আহত ২১৮ শ্রমিক
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৮:৫৯ পিএম | আপডেট: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৮:৫৯ পিএম
চলতি বছরে অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রের কারণে বিভিন্ন সেক্টরে ৯০৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। একই সময়ে ২১৮ জন আহত হয়েছেন জানিয়ে এক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ অক্যুপেশনাল সেইফটি, হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট (ওশি) ফাউন্ডেশন। সংস্থাটির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিগত ২০২৩ সালে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৩২ জন এবং আহত হয়েছিলেন ৫০২ জন। ফলে গত বছরের তুলনায় শ্রমিক নিহতের সংখ্যা কমেছে ৫২৭ জন যা ৩৬.৮ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা কমেছে ২৮৪ জন বা ৫৬.৬ শতাংশ।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৪ প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানান ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. এস এম মোর্শেদ। ১৫টি দৈনিক সংবাদপত্র এবং ওশি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাঠপর্যায় থেকে সংগ্রহ তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে কর্মক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিহত শ্রমিকের সংখ্যা ১১৩ জন ও আহত শ্রমিকের সংখ্যা ৭৫ জন এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিহত শ্রমিকের সংখ্যা ৭৯২ জন ও আহত শ্রমিকের সংখ্যা ১৪৩ জন।
সেক্টরভিত্তিক তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে পরিবহনখাতে সর্বোচ্চ ৫২২ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন ও আহত হয়েছেন ৫২ জন, ১৪৮ জন দিনমজুর নিহত হয়েছেন ও আহত হয়েছেন ৭২ জন, নির্মাণখাতে নিহত ৬২ জন এবং আহত ৫ জন, কৃষিখাতে শ্রমিক মৃত্যুর সংখ্যা ৬১ জন ও আহত হয়েছেন ১ জন, মৎস্যখাতে নিহত ২৫ জন ও আহত ১০ জন, পোশাকশিল্পে নিহত ৫ জন ও আহত ২৯ জন, বিভিন্ন সেবাখাতে নিহত ২৪ জন ও আহত ১ জন, জাহাজভাঙা/শিপব্রেকিংয়ে নিহত ১১ জন ও আহত ৬ জন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নিহত ৬ জন ও আহত ৩ জন, নিরাপত্তাখাতে নিহত ৫ জন ও আহত ২ জন, গৃহস্থালি কাজে নিহত ৫ জন ও আহত ১ জন, চা শ্রমিক নিহত ৩ জন এবং অন্যান্য খাতে শ্রমিক নিহত ২৮ জন ও আহত ৩৬ জন।
প্রতিবেদনে কর্মস্থলে হতাহতের উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, অগ্নিকান্ড, ভবন বা স্থাপনা থকে পড়ে যাওয়া, বজ্রপাত, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, গৃহশ্রমিকদের ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতন, দেয়াল-ভবন-ছাদ ধস, বন্যপ্রাণীর আক্রমণ, ও ভ‚মিধসের কথা বলা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে ওশি ফাউন্ডেশনের সুপারিশগুলো হচ্ছে-
১. শ্রম আইন ও বিধিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার করা।
২. শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে মালিক শ্রমিক প্রতিনিধি সমন্বয়ে সেইফটি কমিটি গঠন।
৩. কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের পরিবারকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা এবং আহত শ্রমিককে ৫ লক্ষ টাকা সহায়তা প্রদান।
৪. সকল সেক্টওে ‘সেইফটি অডিট’ চালু করা, সরকারিভাবে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তথ্যের সঠিক ডাটাবেজ তৈরি।
৫. সর্বজনীন পেনশন স্কিমে দুর্ঘটনায় নিহত/আহত শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি।
৬. শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালকে আধুনিকায়ন।
৭. কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ পিপিই ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।
৮. পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা সম্পর্কে শিল্প মালিক ও ব্যবস্থাপকদের অবহিতকরণ।
৯. পেশাগত ব্যাধি নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করা।
১০. অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের পরিবার ও আহত শ্রমিককে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনাধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
আরও পড়ুন
- ওষুধসহ ৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ
- বাড়ছে সোনার দাম
- বছরের প্রথম দিনে দাম কমলো ডিজেল ও কেরোসিনের
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়াল ২৬ বিলিয়ন ডলার
- ২৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৯ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা
- শীতের সবজিতে কমেছে কেজি প্রতি প্রায় ৩০ টাকা, জনমনে স্বস্তি
- ডলার কেনা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠিন নির্দেশনা
- পোশাক শিল্পে রফতানির ক্রয়াদেশ বাড়ছে