টিউলিপের বিরুদ্ধে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ নেয়ার অভিযোগ, ব্রিটেনের তদন্ত শুরু
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:৪২ পিএম | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:৪২ পিএম
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চার বিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ নেয়ার অভিযোগের তদন্ত শুরু করবে ব্রিটেন। বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির সাথে জড়িত কথিত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।
গতকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপ সিদ্দিক, তার যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী মা শেখ রেহানা সিদ্দিক এবং তার খালা বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে শাসন করা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে দুর্নীতিরোধের দায়িত্ব রয়েছে সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের কাঁধে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহের সহিংস বিক্ষোভের পর বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী শত শত বেসামরিক লোককে হত্যা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসিনা তার বোন রেহানাকে নিয়ে আগস্টে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান। বাংলাদেশের হাইকোর্টের আদেশের পরে তদন্ত শুরু করা হয়। সেখানে দাবি করা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক মোট ১০ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক চুক্তির ‘দালালি’ করতে সহায়তা করেছিলেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে রোসাটম নামে একটি রাশিয়ান রাষ্ট্র-সমর্থিত কোম্পানি কাজ করছে। ২০১৩ সালে শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টিউলিপ সিদ্দিকের উপস্থিতিতে ক্রেমলিনের অভ্যন্তরে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। টিউলিপ তখন একজন লেবার কাউন্সিলর ছিলেন।
দুদক টিউলিট সিদ্দিকের পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করছে। যার মধ্যে তার খালাতো ভাই সজীব ওয়াজেদ জয়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন এবং তার চাচা তারিক সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশে লুকিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আদালতের কাগজপত্রে তাদের নাম ছিল।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘কমিশন জড়িতদের অবস্থান নির্বিশেষে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামে মার্কিন-ভিত্তিক নিউজ ওয়েবসাইটের রূপপুরবিষয়ক নিবন্ধের প্রকাশের পর বাংলাদেশী গণমাধ্যমগুলোও সেটি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে। যেখানে টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যদের চার বিলিয়ন পাউন্ড কিভাবে চুরি করা হয়েছিল তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
নথিতে বলা হয়েছে, সিদ্দিক, হাসিনা ও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মধ্যস্থতার বিনিময়ে আত্মসাৎকৃত তহবিলের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন।
এমনকি দাবি করা হয়েছে, প্রচ্ছয়া লিমিটেড নামের একটি ‘ভুয়া’ কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ৭০৯ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত পাচার করা হয়েছে ‘যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে’।
হাসিনার শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের গুম করা। অ্যামনেস্টির মতো গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে হাসিনা সরকারের অপব্যবহারের কথা তুলে ধরেছে।
হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি অন্যান্য দুর্নীতির বিষয়ে আদালতে বিভিন্ন কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। টিউলিপ অতীতে তার খালা হাসিনাকে একজন ‘রোল মডেল’ হিসেবে প্রশংসা করেছেন, কিন্তু আগস্টে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি টিউলিপ। তার খালার কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাথে অর্থমন্ত্রী টিউলিপের সম্পৃক্ততা এক দশকেরও বেশি পুরোনো, কারণ এরপর তিনি বৃটিশ মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।
উইট ইস্টের টোরি এমপি জো রবার্টসন বলেছেন, ‘এটি স্পষ্ট যে অভিযোগ গুরুতর, এখানে মন্ত্রী টিউলিপের সম্পৃক্ততা কতখানি ছিল তা জানা প্রয়োজন। গুরুতর তদন্তের অধীনে থেকেও সিদ্দিক কি তার মন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন?’
আরও পড়ুন
- ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ জন্য ভারতে ডিটেনশন সেন্টার তৈরির ঘোষণা
- নাইজেরিয়ায় পদদলিত হয়ে ৩৫ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু
- বার্ড ফ্লু : ক্যালিফোর্নিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি
- নির্বাচনকে স্বাগত, গুমের ঘটনায় ন্যায়বিচারের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
- ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নয় ভারতের বিজয় দিবস : মোদি
- ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র
- অভিশংসিত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট
- ২০২৩ সালে বাংলাদেশে কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর