1. »
  2. রাজনীতি

তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্যের কড়া সমালোচনা রিজভীর

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:৪৬ পিএম | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:৪৬ পিএম

তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্যের কড়া সমালোচনা রিজভীর

রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে চেষ্টা করছে তথ্য উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা বিচার বিভাগ, দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আপনাদের (অন্তবর্তীকালীন সরকার) কথাবার্তা এবং আচরণ কেনো হাসিনার মত হবে! আপনারা অগ্রযাত্রাকে সহযোগিতা করবেন। সরকারের সমালোচনা করা মানে ব্যর্থ নয়, এটিই গণতন্ত্রের রীতি।

রিজভী বলেন, ড. ইউনুসের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে যদি বলি তার মত সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যখন দেশের গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ কুক্ষিগত করে রেখেছিল, খালেদা জিয়া যখন অত্যাচারিত হয়েছে, তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশান্তরি করে রাখা হলো, বিনাদোষে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ করা হলো, গুম-খুনে মেতে উঠেছিলো তখনতো ড. ইউনুস একটি বিবৃতি জানিয়ে নিন্দা জানাননি। অথচ আপনার (ড.ইউনুস) প্রতি যখন অন্যায় হয়েছে বিএনপি কিন্তু ঠিকই তখন প্রতিবাদ করেছে। ইউনুস সাহেব সর্ব নন্দিত একজন ব্যক্তি। ক্ষুধা বিমোচন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে যে ভূমিকা রেখেছেন তা আমরা গর্ববোধ করি। তবে, জাতিকে যখন আওয়ামী লীগ দাসে পরিনত করেছিলো তখন জাতি প্রত্যাশা করেছিলো ড. ইউনুস প্রতিবাদ জানাবেন, বিবৃতি দিবেন।

তিনি বলেন, ইংরেজ শাসনামলে ১৯১৯ সালে ইংরেজ সৈনিকরা যখন গুলি চালিয়ে হিন্দুদের হত্যা করলো তখন ইংরেজদের দেওয়া সম্মাননা প্রত্যাহার করেছিলো। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীর ভাঙ্গাপ্রেসস্থ নবী টাওয়ারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলোর মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান শেষে তিনি এসব কথা বলেন। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা এমন একটি বাস করছি যেখানে বাস করতে হলে পাশ্ববর্তী দেশের অনুমতি নিয়ে বসবাস করতে হবে। এবং তারা যাকে ক্ষমতায় আনতে চায় তাকেই মানতে হবে। ঐ সরকার যেভাবে এদেশ চালাবে সেভাবেই চলতে হবে। তাহলে পাক যুদ্ধ কেনো হয়েছিলো? পাকিস্তান ও তাদের মধ্যেতো কোনো পার্থক্য দেখছি না। 

তিনি বলেন, আজকে পতিত স্বৈরশাসকের জন্য ভারত মায়াকান্না করছে। দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। এই যাত্রাবাড়ীতে তো শত-শত মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এখানেইতো অনেক মন্দির আছে সেখানে কোনো হামলা হয়েছে, কোনো হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়েছে? এসব ধূম্রজাল সৃষ্টি করে তারা গণ ধিকৃত আওয়ামী লীগকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়। 

তিনি আরও বলেন, এই যাত্রাবাড়ীতে অসংখ্য মা তার সন্তান হারিয়েছে, স্ত্রী বিধবা হয়েছে, সন্তান এতিম হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর এই বিপ্লব জেলে ঘেকে আমাদের আত্ম বিহ্বল করেছে। চার আগষ্টও আমি রিমান্ডে ছিলাম। তখনও শুনলাম গণতন্ত্রের দাবিতে যাত্রাবাড়ী জ্বলছে। এখানে মাসুম বাচ্চারাও ঘরে বসে থাকেনি। তারাতো রাজনীতি বুঝে না। শুধুমাত্র শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেওয়ার অপরাধে এই মাসুম বাচ্চাদেরও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই আত্মত্যাগ পৃথিবীতে খুবই বিরল। এই যাত্রাবাড়ীতে ঘরে ঘরে জাতীয়তাবাদী শক্তি। এই শক্তি সকল অত্যাচার-অবিচারের ভেদকে বের হতে সক্ষম।

তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনে এখনও পতিত আওয়ামী স্বৈরশাসকের দোসর বিদ্যমান। তাই হত্যা মামলা নিয়ে ধরি মসি করছেন। হত্যাকারীদের আটকের জন্য পুলিশ কঠিন হচ্ছে না। তাই অবিলম্বে পুলিশের নামে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ঢাকা ৫ আসনের সমন্বয়কারী নবী উল্লাহ নবীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল ইসলাম, মকবুল হোসেন টিপুসহ যাত্রাবাড়ীতে শহীদ পরিবারের পরিবারবর্গ। 

সভাপতির বক্তব্যে নবী উল্লাহ নবী বলেন, হায়েনা সরকারের দলীয় ক্যাডার এবং পুলিশ বাহিনী যেভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে তার বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে। যারা এই সরকারের দোসর ছিলেন, লুটেরা ও খুনীদের ইন্ধন দিয়েছেন তাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।