1. »
  2. জাতীয়

জনগণের কাছে সংস্কার প্রস্তাব পৌঁছাতে হবে : তারেক রহমান

রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৮:১৮ পিএম | আপডেট: রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৮:১৮ পিএম

জনগণের কাছে সংস্কার প্রস্তাব পৌঁছাতে হবে : তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে কিভাবে পুনর্গঠন করতে চায় বিএনপি তারই অংশ হিসেবে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সংস্কার প্রস্তাব শুধু দলীয় কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, প্রতিটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তার মতে, যদি কারও তাতে আপত্তি বা প্রস্তাবনা থাকে; তাহলে ৩১ দফা থেকে সংস্কার কিংবা সংযোজন করা হবে। বিএনপির ওপর জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে দলের কর্মীদের। 

আজ রোববার রাজধানীর ক্ষিলখেত এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত কর্মীসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মীসভা উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক  আমিনুল হক। 

তারেক রহমান বলেন, জনগণের সমর্থনকে যে কোনোভাবে অর্থাৎ ইতিবাচকভাবে বিএনপির পক্ষে রাখতে হবে। জনগণ যেভাবে বলবে, সেভাবেই পরিচালিত হতে হবে। তিনি বলেন, হাতের পাঁচ আঙ্গুল সমান নয়, মানুষও তা একরকম হয় না। ৫ আগস্টের পর গত চার মাসে দলের কিছু নেতাকর্মী বিভ্রান্ত হয়েছেন, বিভ্রান্ত করছেন। যে কারণে তাদের অনেকের কাজকর্ম সাধারণ মানুষ পছন্দ করছেন না। বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ মানুষের সমর্থন, আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। যদি লক্ষ্য অন্যকিছু হয়ে থাকে, তবে দু’দিন পর ছিটকে পড়ে যাবেন, জনগণের সমর্থন থেকে ছিটকে পড়বেন, তাদের আস্থা থেকে দূরে সরে যাবেন। তাই সবাইকে জনগণের আস্থা ও সম্মান এবং সমর্থন ধরে রেখতে কাজ করতে হবে। জান-প্রাণ দিয়ে জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ভালোবাসা ধরে রাখতে হবে। 

খিলক্ষেত থানা বিএনপির আহবায়ক এসএম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য সচিব মোস্তাফা জামান, যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন,ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, মোঃ আক্তার হোসেন, মোঃ আতাউর রহমান, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মোঃ তুহিরুল ইসলাম তুহিন, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, মোঃ আফাজ উদ্দিন, হাজী মোঃ ইউসুফ,শাহ আলম, মাহাবুবুল আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আলী আকবর আলী, জিয়াউর রহমান জিয়া, ইব্রাহিম খলিল (সহ দপ্তর),ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের আহবায়ক কাজী শাহআলম রাজা সদস্য সচিব কামরুল জামান,স্বেচ্ছাসেবকদল ঢাকা মহানগর উত্তর এর সদস্য সচিব মহসিন সিদ্দিকী রনি,ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হাসান রাজ,মহিলাদল ঢাকা মহানগর উত্তর এর সদস্য সচিব এ্যাড রুনা লায়লা, তাতী দলের শামসুন্নাহার,কৃষকদলের ডন,খিলক্ষেত থানা বিএনপিরযুগ্ম আহবায়ক সোহরাব খান স্বপন,মোবারক হোসেন দেওয়ান,সি এম আনোয়ার হোসেনসহ প্রমুখ। 

বরিশাল ব্যুরো জানান, আজ বরিশাল নগরীর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তরে  রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বিষয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় ।কর্মশালায় ভার্সুয়ালী সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথিতি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ার‌্যান তারেক রহমান।  

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তারেক রহমান বলেন, আমরা চাই সকল দলকে নিয়ে এমন সরকার গঠন করতে যাতে সব মানুষ মতামত রাখতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেককে তার অবস্থান থেকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে। জনগণের আস্থাকে রক্ষা করতে হবে। এ ব্যাপার সচেতন থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। জনগণের বিশ্বাস এবং আস্থাই হচ্ছে আমাদের পূঁজি। রাজীতির পুজিঁ হতে হবে জনগনের আস্থা ও ভালবাসা। দেশ পূণঃগঠনের জন্য ৩১ দফা মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার আহŸান জানান তিনি।  

তিনি আরো বলেন, ৩১ দফার আলোকে দেশকে পুনঃগঠন করতে চাই। এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি যে মানুষের আস্থা অর্জন করেছে তা ধরে রঅখতে হবে। মানুষের প্রত্যাশা নয় এমন কাজ থেকে বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরত থাকতে হবে। তিনি ৩১ দফা মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। এ নিয়ে জেলা উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে সেমিনার করার জন্য নেতা কর্মীদের তিনি নির্দেশ দেন ।

তিনি বলেন, দেশকে গড়তে হলে সকলকে কাজে নামতে হবে। এজন্য তিনি বিএনপি নেতাহর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান। তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ দুনীতি করে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। 

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে যে উন্নয়নমুলক কাজ হবে বিশেষ করে স্থাপনাগুলোর নাম জুলাই-আগষ্টের বিপ্লবে শহীদসহ যারা গত ৫ বছরে শহীদ হয়েছে তাদের নামে নামকরন করা হবে। 

প্রশিক্ষন কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান। প্রধান প্রশিক্ষক অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএপির প্রশিক্ষন কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য   মুখ্য প্রশিক্ষক ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপির চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ্যাভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, বিএনপি কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সস্পাদক আকন কুদ্দুর রহমান, বিএপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ার‌্যানের উপদেষ্টা ড. মাহতি আমিন, বিএনপির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় হ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক  নান্নু, সাবেক ছাত্র নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, বিএনপির প্রশিক্ষন সেলের সদস্য আনিছুর রহমান খোকন, বিএনপি নেত্রী নেয়াজ হালিমা আলী। 

কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতা কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এই প্রশিক্ষন কর্মশালায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ৫ শতাধিক নেতা কর্মী অংশ নেন। 

উদ্বোনী বক্তৃতায় বেগম সেলিসা রহমান বলেছেন, স্বৈরাচরের দোসররা এখনও দেশে রয়েছে। তারা দেশে অস্থিতিশলি পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন দলে যাতে কেউ অনু প্রবেশ করতে পারে সে বিষয় বিএনপি নেতা কর্মীদের শর্তক থাকতে হবে।

রংপুর ব্যুরো জানান, রংপুরে দলটির বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান তারেক রহমান বলেন, দেশের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব।  আমরা সব দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যেখানে সবাই মতামত প্রকাশ করতে পারবে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা কোনোভাবেই ২০ কোটির কম নয় বলে আমার ধারণা। ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জনশক্তি তৈরি করব। যাতে দেশে কোনো বেকারত্ব না থাকে। এ সময় সরকার গঠন করতে পারলে গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে নিহতদের স্মরণে স্থাপনা ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে চাকরি ব্যবস্থা করা হবে। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব ধর্মের মানুষকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব জায়গায় বিভেদ তৈরি করেছিল। এতে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছে। এ সময় বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি। 

এ সময় লালমনিরহাটে বিমানবন্দর চালু করার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ব্যবসায়িক বিষয়। ভর্তুকি দিয়ে বিমানবন্দর চালানো যাবে না। তবে কোনো প্রাইভেট কোম্পানি এটাকে লাভবান হিসেবে দেখাতে পারলে সরকার অবকাঠামো তৈরি করে দিতে পারে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় সঞ্চলয়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল। বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সংগীত শিল্পী বেবি নাজনীন, মিডিয়া সেলের সদস্য মেহেরা আক্তার বারি, ফারজানা শারমিন, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ। 

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, রংপুর জেলার আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন, জেলার সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু সহ রংপুর বিভাগের ১০ টি সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্নস্থরের নেতৃবৃন্দ।  

উল্লেখ্য, কর্মশালায় রংপুর বিভাগের ১০টি রাজনৈতিক জেলা থেকে প্রায় ৫শত ৭৪জন প্রশিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।