1. »
  2. রাজনীতি

স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানালেন রুহুল কবির রিজভী

বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৫:০৫ পিএম | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৫:০৫ পিএম

স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানালেন রুহুল কবির রিজভী

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমননা এবং আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনে’র আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে রিজভী নিজের স্ত্রী আরজুমান আরা বেগমের দেওয়া ভারতীয় শাড়ি নিজের হাতে ছুড়ে ফেলে দেন অনুষ্ঠানস্থলে। পরে নেতাকর্মীরা সেই শাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

রিজভী বলেন, যারা আমার দেশের পতাকাকে নামিয়ে যারা ছিঁড়ে দেয়- আমরা তাদের দেশের পণ্য বর্জন করব। আমরা তাদের দেশের যে শাড়ি কিনত আমাদের মা-বোনেরা-স্ত্রীরা তারা আর ভারতীয় শাড়ি কিনবে না। তারা ভারতের সাবান কিনবে না, তারা ভারতের টুথপেস্ট কিনবে না, তারা ভারতের কোনো কিছু কিনবে না। আমার দেশ আমরা স্বনির্ভর। আমার এখানে পেঁয়াজ হয়। ভারতের পেঁয়াজের চাইতে আমাদের পেঁয়াজের ঝাঁজ অনেক বেশি, ভারতের মরিচের চাইতে আমাদের মরিচের ঝাল অনেক বেশি।

তিনি বলেন, একটি পুরোনো ভারতীয় শাড়ি আমার স্ত্রীর ছিল। সেই শাড়ি আমাকে দিয়েছে। এটা আজকে আপনাদের সামনে আমি ছুড়ে ফেললাম (ছুঁড়ে ফেলে দিলে কর্মীরা ভারত বিরোধী স্লোগান দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়) আর কোনো ভারতীয় শাড়ি নয়। আমরা টাঙ্গাইলের শাড়ি পড়ব, আমরা রাজশাহীর সিল্ক পড়ব, আমরা কুমিল্লার খদ্দর পড়ব।

এ সময়ে কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকে ‘বয়কট বয়কট, ভারতীয় পণ্য’। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশীয় পন্য কিনে হও ধন্য’ ব্যানারে ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশি পণ্য ব্যবহার উসাহিত করতে এই অনুষ্ঠানটি হয়।

রিজভী বলেন, আমার দেশের জনগণকে বলব, ওরা যে বাংলাদেশের লুণ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে, ওরা যে বাংলাদেশের পতাকা পুঁড়িয়েছে, আমাদের মর্যাদাহানি করার চেষ্টা করেছে। আমরা ভারতের পতাকাকে লাঞ্ছিত করব না, আমরা আরেকটা স্বাধীন দেশের মর্যাদাকে ছোট করব না। আমরা প্রত্যেক জাতির যে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সেটিকে আমরা সন্মান করব। আমরা ওদের দেশের পতাকাকে সন্মান করব কিন্তু ওদের পণ্য বর্জন করব।

ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে না না অপপ্রচার করছ, তোমরা আমাদেরকে পছন্দ করো না। তারপরও তোমাদের জিনিস আমাদের কিনতে হবে? বাংলাদেশের মানুষ তো মাথানত করার মানুষ না। আমরা এক বেলা খেয়ে থাকব, তারপরও আমরা মাথানত করবো না।

রিজভী বলেন, ভারতের অনেক সাংবাদিক, অনেক রাজনৈতিক নেতা তারা বলেন যে, আমাদের (ভারতে) এখানে না আসলে আপনাদের (বাংলাদেশের মানুষের) চিকিৎসা হয় না। আমি প্রশ্ন করি, আরে আপনারা কি বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেন, আপনারা কি বিনা টাকায় এক কাপ চা খাওয়ান, এই নজির তো নাই আপনাদের। বাংলাদেশের লোক ডলার খরচ করে ওখানে গিয়ে। এখন কলকাতার নিউ মার্কেট বন্ধ, দোকান পাট বন্ধ সেখানে আর কোনো খরিদদার নাই।

তিনি বলেন, ওখানের একজন ডাক্তার নাকি বলেছেন, এবার বাংলাদেশের রোগী আসলে সেখানে ভারতীয় পতাকা এমনভাবে রাখা হবে যেন তারা মাথা নিচু করে ঢুকে। আপনারা বাংলাদেশের মানুষকে চিনেন না। আপনারা অনেক জাতিকে সেখানে (ভারতে) পদানত করে রেখেছেন যারা স্বাধীনতা চায়.. এগুলো আপনাদের বিষয় আমরা কিছু বলতে চাই না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে চিনেন না। ওই পশ্চিমা পাকিস্তানি পাঞ্জাবিরাও কিন্তু এদেশের মানুষকে, লুঙ্গি পরা মানুষ হাতে স্ট্যান্ড গান নিয়ে নদী সাতারে ওই পাকিস্তানিতে পরাভূত করেছে। নদীনালার দেশ, খাল-বিলের দেশ, বন্যা-খরার দেশ আমরা কি করে এই অবস্থায় শত্রুদের প্রতিরোধ করতে হয় সেটা আমরা জানি।

রিজভী বলেন, তারা নিষ্ঠুর হাসিনাকে পছন্দ করে, বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ টিকে থাকুক এটা তারা চায় না। আজকে তারা নানা ধরনের উস্কানি দিচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে.. বাংলাদেশের ভেতরে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের উস্কানিতে পা দেয়নি। দুই-একটা গোষ্ঠী থাকতে পার, তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে, তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ যে আমাদের এখানে উসকানি দিতে পারে এটা গোটা জাতি ধরে ফেলেছে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর যে ঐক্য এটা ইস্পাতকঠিন ঐক্য এই ঐক্যকে কেউ ভাঙতে পারবে না।

ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বাস্থ্য সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জাহিদুল কবির, জাহা্ঙ্গীর আলম, তৌ্হিদুর রহমান আউয়ালও বক্তব্য রাখেন।