1. »
  2. খেলার মাঠ

বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু আজ

রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ০৪:২১ পিএম | আপডেট: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ০৪:২১ পিএম

বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজ  শুরু আজ

আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি আজ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। 

এই সিরিজে জয়ের জন্য খেলবে বাংলাদেশ। এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা। চেন্নাইতে প্রথম টেস্ট ২৮০ রানের ব্যবধানে হারে টাইগাররা। দ্বিতীয় টেস্ট আড়াই দিনের বেশি সময় বৈরি আবহাওয়ায় ভেস্তে যাবার পরও পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসে ৭ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। দুই টেস্টেই লজ্জাজনক হারের কারণে প্রথম জয়ের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো বাংলাদেশের। 

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়। ১৪ ম্যাচের ১৩টিতেই হার ও ১টিতে জিতেছে টাইগাররা। ২০১৯ সালে ভারতের মাটিতে সর্বশেষ সফরে একমাত্র জয়টি পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ঐ সময় তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৭ উইকেটের জয় দিয়ে শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু রাজকোট এবং নাগপুরে শেষ দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৮ উইকেটে ও ৩০ রানে হেরেছিলো টাইগাররা। ফলে সিরিজে দারুণ সূচনার পরও ২-১ ব্যবধানে হারতে হয় তাদের। 

টেস্ট সিরিজে সাফল্য না পেলেও টি-টোয়েন্টিতে জয়ের ভালো সুযোগ বাংলাদেশের সামনে আছে। কারণ, দলের দুই সেরা তারকা রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির অবসরের পর ভারতের টি-টোয়েন্টি দল একটি বড় পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। টেস্ট সিরিজ খেলা বাংলাদেশের বেশিরভাগ খেলোয়াড় টি-টোয়েন্টি দলে থাকলেও ভারতের টেস্ট দলের কোন খেলোয়াড়েরই টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে জায়গা পায়নি। 

গোয়ালিয়রে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘এই সিরিজে আমাদের খেলোয়াড়রা অন্য এক অ্যাপ্রোচে খেলার চেষ্টা করছে। সবাই জয়ের জন্য খেলবে।’ অধিনায়ক শান্ত জানিয়েছেন ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে লক্ষ্য করে এখন থেকেই প্রতিটি সিরিজের পরিকল্পনা সাজানো হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বর্তমানে দলে থাকা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি আরও চার-পাঁচজন যোগ হবে, তারাই ২০২৬ সালে বিশ্বকাপে খেলতে পারে। 

আমি মনে করি, এই সিরিজ থেকে আমাদের বিশ^কাপের প্রস্তুতি শুরু হবে। এখন থেকে অবশ্যই ২০২৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা আমরা পরিকল্পনায় রাখবো। এই দলে ১৫ জন খেলোয়াড় আছে এবং এর বাইরে আরও ৪/৫ জন আছে। এই ২০-২২ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে আমরা  প্রস্তুতি নিবো। ভবিষ্যতে তারাই খেলবে। এজন্য এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে।’

এই সিরিজ দিয়ে সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে পথচলা শুরু করবে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ছোট সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। অলরাউন্ডার সাকিবের জায়গা পূরণের জন্য মেহেদি হাসান মিরাজকে দলে ফিরিয়েছে বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অভাব মিরাজ পূরণ করতে পারবেন বলে বিশ্বাস শান্তর। 

তিনি বলেন, ‘সাকিব ভাই এতদিন ধরে আমাদের দলের সাথে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তার জায়গা পূরণ করতে কিছুটা সময় লাগবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটাকে বড় সমস্যা বলবো না। তবে তাকে ছাড়া একাদশ সাজাতে কিছুটা অসুবিধা হবে। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই ভালো কম্বিনেশন দিতেন সাকিব। আমরা মিরাজকে নিয়ে এসেছি এবং আশা করি ঐ জায়গায় দ্রুত মানিয়ে নিবে সে।’


রবি বিষ্ণয় ও রিশাদ হোসেন-যাঁর যাঁর দলে তাঁরা দুজনই এখন অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত। যুজবেন্দ্র চাহাল দল থেকে বাদ পড়ার পর বিষ্ণয় ভারতের প্রথম পছন্দের লেগ স্পিনার। সর্বশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিটি ম্যাচ খেলেছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশের রিশাদের গল্পটা তো সবার জানা। কীভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ না পাওয়া রিশাদ এখন দলের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন। গোয়ালিয়রে বাংলাদেশ–ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন এই দুই লেগ স্পিনার।

গোয়ালিয়রের উইকেট দুই দলের জন্যই অচেনা। আজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারতের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হবে এ মাঠের। তবে গত ১২ মাসে ভারতের মাটিতে সন্ধ্যায় বা রাতে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করা দলগুলো গড়ে ১৯০- এর বেশি রান তুলেছে।

স্বাভাবিকভাবেই গোয়ালিয়রের উইকেট খুব বেশি ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। সেই হিসাবে উইকেটে ব্যাটসম্যানদের জন্যই সুবিধা থাকার কথা। আর ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধা থাকলেই বরং অনেক ক্ষেত্রে রিশাদ বা বিষ্ণয়ের জন্য ভালো হতে পারে।

যদিও দুজনের কৌশল অনেকটাই ভিন্ন। বিষ্ণয় ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার গতির আশপাশে বোলিং করেন। তাঁর গতি প্রথাগত লেগ স্পিনারদের চেয়ে একটু বেশি।

বেশির ভাগ বল করেন স্টাম্প টু স্টাম্প। হাওয়ায় ভাসিয়ে ব্যাটসম্যানের বিভ্রান্ত করার চেয়ে স্লাইডার, দ্রুতগতির লেগ ব্রেকে ব্যাটসম্যানদের ভোগাতে চান তিনি। অন্যদিকে রিশাদ বল হাওয়ায় ভাসাতে পছন্দ করেন, সেটা ডেথ ওভারেও।

আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এভাবে বোলিং করে ১৪ উইকেট নিয়ে রিশাদ নিজের সামর্থ্য দেখিয়েছেনও। বিষ্ণয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি। তবে এরপর খেলা ৮টি টি-টোয়েন্টিতে উইকেট নিয়েছেন ১২টি। বর্তমানে ভারত দলে লেগ স্পিনার হিসেবে প্রথম পছন্দ তিনিই।

একসময়ে বাংলাদেশ দলে অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করা শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন এখন কাজ করছেন আইপিএলের দল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসে। আইপিএলে বিষ্ণয় এই দলেই খেলেন। সেই সুবাদে রিশাদ ও বিষ্ণয়ের দুজনকেই কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। 

এই অ্যানালিস্টের মতে, প্রথম ম্যাচে এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন এই দুই লেগ স্পিনারই। প্রথম আলোকে তিনি বলেছেন, ‘ রিশাদ ও বিষ্ণয়ের দুজনই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। দলীয় সংগ্রহ ১৫০, নাকি এর বেশি হবে, সেটা তারাই নির্ধারণ করবে।’

২০২২ সাল থেকে ভারতের হয়ে খেলা বিষ্ণয়ের টি-টোয়েন্টি উইকেট ৪৮টি। আজকের ম্যাচ দিয়েই নিঃসন্দেহে ৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে চাইবেন এই লেগ স্পিনার। রিশাদের অন্য লক্ষ্যও থাকতে পারে। বিগ ব্যাশে সুযোগ পেয়েছেন, ভারতের মাটিতে পারফর্ম করলে সুযোগ মিলতে পারে আইপিএলেও।