শেরপুরে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৭, প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৪৯ এএম | আপডেট: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৪৯ এএম
টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, নকলায় বৃদ্ধ ও নারীসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নতুন করে সদর ও নকলা উপজেলার ৪ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
এতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীসহ জেলায় আমন আবাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ভেসে গেছে ২ হাজারেরও বেশি পুকুর ও মৎস্য খামার। এতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন জেলার কৃষকরা। এই ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেবেন তা নিয়ে কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, পানি পুরোপুরি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হবে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের পানি কিছুটা নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলের অন্তত দুইশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ, মাছের ঘের ও সবজি আবাদ। এদিকে পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও নকলায় বৃদ্ধ ও নারীসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলাসহ জেলার অন্তত ৩৬ হাজার হেক্টর আবাদি জমির আমন ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ১ হাজার হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর মাছের ঘের তলিয়ে গেছে ২ হাজারেরও বেশি। এতে মাথায় হাত পড়েছে আমন ও মৎস্যচাষীদের। সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার অন্তত ৬৫ হাজার ৪শ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।
শেরপুর খামারবাড়ীর উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, পাহাড়ি ঢলে তিন উপজেলার আমন ধান ও সবজি আবাদ নষ্ট হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি কমবেশি নির্ভর করবে পানি নেমে যাওয়ার উপর। আর ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
অন্যদিকে নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে ও নদীর পাড় উপচে পানি যাওয়ায় রামচন্দ্রকুড়া, কাকরকান্দি, নন্নী, পোড়াগাঁও, নয়াবিল, বাঘবেড়, কলসপাড়, মরিচপুরান, যোগানিয়া, রাজনগরসহ ১০টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরের তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
জেলার সব সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। বন্যাকবলিত বেশ কিছু এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় রাতভর পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা করেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধারকাজ পরিচালনা করেন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, অবিরাম বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছে। আমাদের সংগ্রহে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার রয়েছে। পানিবন্দী পরিবারগুলোকে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরবর্তীতে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
গতকাল ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর ভেঙে যাওয়া বাধ পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, মহারশি নদীর বাঁধ উঁচু করার সুযোগ নেই। তবে ভাঙনকবলিত স্থান দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
- ১৪ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
- ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের সড়কের পর রেল অবরোধ, ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ নিজস্ব প্রতিবেদক
- রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ
- গাজীপুরে আজও শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, বন্ধ যান চলাচল
- গাজীপুরে ফের শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ-আগুনে রণক্ষেত্র
- মহাখালীতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের ট্রেনে ঢিল, আহত নারী-শিশুসহ অনেকে
- চার ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে নারায়ণগঞ্জে টিস্যু গুদামের আগুন
- বগুড়ায় মাটি-চুনাপাথর-সিমেন্ট দিয়ে ভেজাল সার তৈরি, কারখানা সিলগালা