এস আলমের সব ধরনের টাকা উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা
মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪ ০১:১৫ পিএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪ ০১:১৫ পিএম
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে থাকা সব ধরনের ঋণ সুবিধা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি তারা আমানতের টাকাও তুলতে পারবে না। এমনকি তাদের নামে থাকা কোনো ক্রেডিট কার্ড দিয়েও লেনদেন করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলম গ্রুপের মালিকানা রয়েছে এমন ছয়টি ব্যাংককে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
এসব ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ইতোমধ্যে ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী ও ন্যাশনাল ব্যাংককে এস আলম গ্রুপের হাত থেকে মুক্ত করেছে। এরপরই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
এসব ব্যাংকসহ অন্য যেসব ব্যাংকে গ্রুপটির নামে-বেনামে ঋণ রয়েছে, সেগুলোতেও নজরদারি শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে, যারা ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশনা দেয়। অন্যান্য ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে যেসব ঋণ রয়েছে, সেগুলোর জন্যও একই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে গ্রুপটির নামে-বেনামে থাকা ঋণের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এত দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রশ্রয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে টাকা তুলে নেয় গ্রুপটি। এখন সরকার পরিবর্তন হওয়ায় তারাই বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে-বেনামে কোনো নতুন ঋণ সুবিধা দেয়া যাবে না। তাদের আগের ঋণগুলোও নবায়ন করা যাবে না। এসব প্রতিষ্ঠান ও গ্রুপের নামে অনুমোদিত ঋণ ও ঋণসীমা বিদ্যমান থাকলেও তার বিপরীতে কোনো ধরনের উত্তোলন সুবিধা দেয়া যাবে না। অর্থাৎ এসব হিসাব থেকে নগদ উত্তোলন, স্থানান্তর বা অন্য যেকোনোভাবেই টাকা সরানো যাবে না। এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠান-গ্রুপের নামে অনুমোদিত ঋণপত্র বা গ্যারান্টির মেয়াদ থাকলেও এর বিপরীতে নতুন করে সুবিধা দেয়া যাবে না।
তবে আগে ঋণপত্র খোলা হয়েছে, এমন দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব, রফতানি প্রত্যাবাসন কোটা অথবা টাকার আমানত হিসাবে থাকা অর্থ ব্যবহার করা যাবে। এসব প্রতিষ্ঠানের যেকোনো ধরনের বিল কেনা বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কোনো পুনঃ অর্থায়ন সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ক্রেডিট কার্ড থাকলে টাকা বা বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন বন্ধ করতে হবে।
তবে প্রতিষ্ঠানের যেকোনো হিসাবে টাকা জমা করা যাবে। এস আলমের নামে ও বেনামে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে আমানত জমা থাকলে, তা থেকে কোনো ধরনের টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে সম্পূর্ণ নিজস্ব উৎস থেকে শতভাগ নগদ অর্থ জমা সাপেক্ষে ঋণপত্র খোলা যাবে।
গত রোববার এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম বা এস আলমসহ তাদের সাত ভাইয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সব ধরনের তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ। সাইফুল আলম মাসুদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর- ৫৯৬২৪৬৭৯৪৯। আর জন্ম ১৯৬০ সালের ১২ জানুয়ারি। ২০২২ সালে এস আলম ও তার পরিবারের লোকজন দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে বিদেশী পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। তার বাবা মোজাহেরুল আনোয়ার ও মা চেমন আরা বেগম। বিদেশী নাগরিকত্ব নেন এস আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন, দুই ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম (২৪১৫৪৫২৬৫২)।
অ্যাকাউন্টের তথ্য তলব করা হয়েছে সাইফুল আলম মাসুদ এবং তার ভাই মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, ওসমান গনি, আবদুস সামাদ, রাশেদুল আলম, সহিদুল আলম ও মোরশেদুল আলমের।
এ ছাড়াও কিছু অ্যাকাউন্টের তথ্য তলব করা হয়েছে। তারা হলেন হামিদুর রহমানের ছেলে মিসকাত আহমেদ, আবুল কাশেমের মেয়ে ফারজানা বেগম ও ফেরদৌসুল কবিরের মেয়ে শাহানা ফেরদৌসের অ্যাকাউন্টের তথ্য তলবের তালিকায়। তারা এস আলম পরিবার-সংশ্লিষ্ট বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ৫০ লাখ টন এলএনজি কেনার চুক্তি বাংলাদেশের
- দাম কমেছে সবজির, অস্বাভাবিক সয়াবিন তেলের বাজার
- সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও বেড়েছে মাছের দাম, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
- বছরের প্রথম ১১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা
- কাঁচা বাজারে স্বস্তি, চাল-মাছ-মুরগিতে আগুন
- রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্ক অপরিবর্তিত থাকবে : অর্থা উপদেষ্টা
- পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে নেই কোনো আগ্রগতি, চিঠি চালাচালি আর বৈঠকই সীমাবদ্ধ
- ওষুধসহ ৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ