1. »
  2. বিনোদন

২১ দিন আয়নাঘরে ছিলেন নওশাবা!

মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৪ ০৪:১৫ পিএম | আপডেট: মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৪ ০৫:২০ পিএম

২১ দিন আয়নাঘরে ছিলেন নওশাবা!

নিরাপদ সড়কের দাবিতে ২০১৮ সালে সড়কে নেমেছিল বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারবিরোধী এক পোস্ট করার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদকে। 

গ্রেপ্তারের পর চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল তাকে। সেখান থেকে কারাগারে প্রেরণ করা হয় এই অভিনেত্রীকে। ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় সিএমএম আদালতে জামিনে মুক্তি পান নওশাবা। সেই সময় নওশাবার গ্রেপ্তার ও তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বেশ চর্চিত ছিল।

এরপর দীর্ঘদিন অভিনয়েও দেখা মেলে না নওশাবার। কোথায় ছিলেন, কীভাবে কেটেছে এই সময়গুলো, গ্রেপ্তারের আগে-পরে কী হয়েছে সেসব নিয়েই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তিনি। 

এসময় নওশাবা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর কতটা দুর্বিষহ সময় পার হয়েছে তার জীবনে। গত ৬ বছরে ২০ বার বাসা বদলেছেন এই অভিনেত্রী। কোথাও বেশিদিন নিরাপদে থাকতে পারতেন না বলে একটি পডকাস্টে জানিয়েছেন নওশাবা।

নওশাবা বলেন, ‘ফেসবুকে সেই স্ট্যাটাস দেওয়ার পরে মাত্র ১৩ মিনিটে সবকিছু হ্যাক করা হয়েছিল। এর কিছুক্ষণ পরই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।’

বিগত ৬ বছরে কোথাও বেশিদিন থাকতে পারেননি নওশাবা। 

প্রচারের অপেক্ষায় থাকা সেই পডকাস্ট শো এর একটি ছবি পোস্ট করেছেন তানভীর তারেক। সেটা উল্লেখ করে তানভীর তারেক লেখেন, ২০১৮ সালে প্রথম রুলিং পার্টির অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শিল্পী হলেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। এরপর আয়নাঘরে তাকে ২১ দিনের নির্যাতন! অতঃপর রিহ্যাবে ছয় মাস।

‘নিজের মেয়েকেই চিনতে পারতো না নওশাবা! সেই সময় থেকে একমাত্র কন্যাকে নিয়ে গত ৬ বছরে ২০ বারের ওপরে বাসা বদলেছে। কেউ বাসা ভাড়া দিতে চায়নি, সংসার ভেঙেছে!

নিজের বাড়িতে জায়গা হয়নি, কারণ ভাই ও আত্মীয়রা নিরাপদ মনে করেনি। বন্ধুর নামে বাসা ভাড়া নিয়ে বোরকা পরে ঢুকতেন! কোনো আপোষ করেননি। অনেক রকম অফার এসেছে! মামলা করেছেন আগেই, যা এখনও চলমান। গল্পগুলো আসছে।’

নওশাবার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, নওশাবা নিজের ফেসবুক আইডিতে থেকে লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করে বলেন, “আমি কাজী নওশাবা আহমেদ, আপনাদের জানাতে চাই, একটু আগে জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুই জনকে মেরে ফেলা হয়েছে। আপনারা সবাই একসাথে হোন। প্লিজ ওদেরকে প্রটেকশন দেন। বাচ্চাগুলো আনসেভড অবস্থায় আছে। প্লিজ আপনারা রাস্তায় নামেন। প্লিজ আপনারা রাস্তায় নামেন এবং ওদের প্রটেকশন দেন। এটা আমার রিকোয়েস্ট। আমি এদেশের একজন মানুষ, নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট করছি যে, জিগাতলায় একটু আগে একটি স্কুলে একটি ছেলের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। একটু আগে ওদেরকে অ্যাটাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। আমরা ’৭১-এ পেরেছি, ’৫২-তে পেরেছি, এবারও পারবো। আমাদের দরকার নাই কাউকে। ”

মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, কাজী নওশাবার এই আহ্বান মুহূর্তেও মধ্যে দেশি-বিদেশি সামাজিক ও ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফলে জনমনে আতঙ্ক ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা তার এই মিথ্যা প্রপ্রাগন্ডার উৎস জানার জন্য ফোন করলে তিনি তার সপক্ষে সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে ওই সময় জিগাতলায় ওরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।

নওশাবা ইচ্ছাকৃতভাবে ও পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য এরূপ মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করে।