নামমাত্র মূল্যে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি
বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪ ০১:৩০ পিএম | আপডেট: বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪ ০৩:২৮ পিএম
প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বৃহত্তর সিলেট বিভাগের চামড়ার বড় ব্যবসা কেন্দ্র সদর উপজেলা শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। গত কয়েক বছর কোরবানির ঈদে চামড়া নিয়ে কেঁদেছেন অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী। ফলে এবার কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার দাম কিছুটা বেশি।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল কোরবানির পশুর চামড়া নামমাত্র মূল্যে বিক্রয় হয়েছে। আড়তদারদের হাঁকডাকে সরব ছিল শ্রীমঙ্গলের বেশ কয়েকটি জায়গায়। তবে সন্ধ্যার পর পুরোদমে চামড়া কেনা-বেচা শুরু হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রতিবছরের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। শ্রীমঙ্গলে বড় বড় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আছেন ছোট ও ক্ষুদ্র এবং মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পরপর বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহ করে সেখানে এনে বিক্রি করছেন। কোরবানি দেওয়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও চামড়া বিক্রি করছেন। বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকেও চামড়া বিক্রি করতে আনা হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল শহরের জুড়ে আশপাশে গলির ভেতর চামড়া বিক্রি হয় সন্ধ্যা পর্যন্ত। যদিও দিনভর চামড়া সংগ্রহ ও বিক্রি চলেছে। বিভিন্ন স্থানে সংগ্রহ করে রাখা চামড়া পিকআপে করে কিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, শ্রীমঙ্গলে উপজেলা জুড়ে গরুর চামড়া সর্বোচ্চ দেড়শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অপরদিকে ছাগলের চামড়া ফ্রিতে দিচ্ছে বিক্রেতারা। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা চামড়া বিক্রি করতে না পারায় সৃষ্টি হয়েছে নানা বিড়ম্বনার। আর লাভবান হচ্ছে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা বেশি দাম দিয়ে চামড়া কিনতে নারাজ। ফলে অনেকে হতাশ হয়ে চামড়া সরকারি দাম ৫৫-৬০ টাকা নির্ধারণ করলেও ২৫-৩০ টাকায় বাধ্য হয়েই বিক্রি করতে হচ্ছে।
অপরদিকে ছাগলের চামড়া নিয়ে আসলে ক্রেতা ক্রয় করতে আগ্রহী না হওয়ায় ফেলে যাচ্ছেন। লাখ টাকায় ক্রয় করা গরুর চামড়া সেখানে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০০-৩০০ টাকায়। অথচ বিক্রেতারা পাচ্ছেন না সরকার নির্ধারিত দাম।
যারা বিক্রি করেছেন তারা দাম না পেয়ে ছিলেন হতাশ। আর যারা ক্রয় করছেন তারা পরবর্তীতে দাম পাবেন কিনা, সে নিয়ে আছেন শঙ্কায়।
শ্রীমঙ্গলে চামড়া বিক্রি করতে আসা আনকার মিয়া বলেন, লাখ টাকায় কেনা গরুর চামড়ার দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন কোরবানিদাতারাও। আমরা বাসাবাড়ি থেকে ৩০০-৫০০ টাকায় একেকটি চামড়া কিনে এনেছি। এখানে একেকটি বিক্রি করেছি ২০০ টাকায়।
আরও একজন চামড়া বিক্রেতা শুকুর মিয়া জানান, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা কোরবানি পশুর চামড়া বিক্রি করেছি মাত্র ১৫০ টাকায়। এর চেয়ে বেশি দাম দিতে রাজি হননি স্থানীয় মৌসুমি ব্যবসায়ী। বর্গফুটের হিসেবে কোথাও চামড়া বিক্রি হয়নি। দাম কম পাওয়ায় বিক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চামড়া ব্যবসায় মনসুর মিয়া বলেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন তারা গত বছর কোরবানির পশুর চামড়া সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কিছুটা কমে কিনলেও এবার চেষ্টা করবেন সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দামে নিতে। ছোট-বড় সাইজের আড়াইশ চামড়া কিনেছেন সর্বোচ্চ ৪০০-৫০০ টাকা।
চামড়া ব্যবসায়ী সামছুল মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার সরকারিভাবেও চামড়ার দাম বাড়ানো হয়েছে। লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
তিনি বলেন, এখনও কিনতে পারছি না। দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। আমরাও কিছু লাভ করতে হবে। যে অবস্থা, ২০-৩০ টাকা থাকতে পারে প্রতি পিছে। দামের সময় ২০০-৩০০ টাকা লাভ হতো। ৯০০ টাকা লবণের বস্তা এখন। যা আগে ৪০০-৫০০ টাকা ছিল।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ডক্টর উর্মি বিনতে সালাম বলেন, সরকার যে দাম নির্ধারিত করে দিয়েছে সে দামেই ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে হবে। লবণের দাম তেমন বাড়েনি। বিভিন্ন স্থানে আমাদের মনিটরিং সেল কাজ করছে।
আরও পড়ুন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ৫০ লাখ টন এলএনজি কেনার চুক্তি বাংলাদেশের
- দাম কমেছে সবজির, অস্বাভাবিক সয়াবিন তেলের বাজার
- সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও বেড়েছে মাছের দাম, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
- বছরের প্রথম ১১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা
- কাঁচা বাজারে স্বস্তি, চাল-মাছ-মুরগিতে আগুন
- রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্ক অপরিবর্তিত থাকবে : অর্থা উপদেষ্টা
- পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে নেই কোনো আগ্রগতি, চিঠি চালাচালি আর বৈঠকই সীমাবদ্ধ
- ওষুধসহ ৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ