ইসরায়েলেকে বাইডেনের কড়া হুঁশিয়ারি
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪ ০১:০০ পিএম | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪ ০১:০০ পিএম
গাজার রাফায় ইসরায়েলের হামলার সিদ্ধান্তের বিষয়ে আবারও অবস্থান স্পষ্ট করল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসন এখনই রাফায় স্থল অভিযান চায় না। এ বিষয়ে ইসরায়েলকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজার রাফা শহরে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র কিছু অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
বাইডেন বলেন, ‘যদি তারা রাফায় প্রবেশ করে আমি কিছু অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেব। আমি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভাকে স্পষ্ট বলেছি, যদি তারা জনবহুল এলাকগুলোতে অভিযান চালায়, তাহলে তারা আমাদের সমর্থন পাবে না।’
তবে ইসরায়েলকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার কাজ চালিয়ে যাবেন বলেও বক্তব্যে অঙ্গীকার করেন।
এর আগে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এই প্রথম ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রের চালানটি গত সপ্তাহে ইসরায়েলে পাঠানোর কথা থাকলেও সেটি আপাতত পাঠানো হচ্ছে না বলে ইসরায়েলকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা। ওই চালানে কয়েক হাজার কেজি বোমা ছিল।
বিবিসি জানায়, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অস্ত্র ও গোলাবারুদের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র। তেল আবিব যেন প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে, তাই প্রতি বছর ৩৮০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য দেয় মার্কিন প্রশাসন।
গাজা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশেরই সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তাদেরও আশঙ্কা, রাফায় ইসরাইলের সর্বাত্মক অভিযান অসংখ্য মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটবে এবং মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে। তাই যুক্তরাষ্ট্র এখনই রাফায় স্থল অভিযান চায় না।
এ ছাড়া মনে করা হচ্ছে, হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সমর্থনের জন্য ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার ওপর চাপ বজায় রাখতে চায় বাইডেন প্রশাসন। মিসরের কায়রোয় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। ইসরাইল এ আলোচনায় কোনো আপসরফায় পৌঁছতে রাজি না হলে তাদের চড়া মূল্য দিতে বাধ্য করবে মার্কিন প্রশাসন। কারণ, এই যুক্তি যে মানা হবে, মধ্যস্থতকারী কাতার ও মিসরকে তার নিশ্চয়তা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল যে মার্কিন সাহায্যনির্ভর বোমার চালান আটকে এবং আরও চালান আটকানোর হুমকি দিয়ে তা আবারও অনুধাবন করাল ওয়াশিংটন।
ইসরায়েলের প্রতি হঠাৎ বাইডেনের বিরূপ আচরণের বিষয়ে আরও একটি কারণ আলোচনা হচ্ছে। তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে গাজা ইস্যুটি জড়িয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে সমর্থনের রাশ টেনে ধরতে ডেমোক্র্যাটিক সমর্থকদের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন।
কারণ, আসন্ন নির্বাচনে এই ইস্যুতে তরুণ ভোটারদের কাছ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বাইডেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চোখ রাঙাচ্ছে বাইডেনের নির্বাচনী ফলাফলকে। এর জেরে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে বোমা সরবরাহ আটকে দেওয়া এবং রাফায় হামলার বিরোধিতা প্রকাশ করছেন বাইডেন।
আরও পড়ুন
- গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বোমা ও গুলিতে ৭১ জন নিহত
- ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোকে পুতিনের হুঁশিয়ারি
- আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল করল কেনিয়া
- গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি : একদিনেই ২৮০০ কোটি ডলার হারালেন আদানি
- উত্তর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
- লেবাননে সংঘাতে ২শ’র ও বেশি শিশু নিহত : ইউনিসেফ
- গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় আরও ১১১ জন নিহত
- ভারতের মণিপুর রাজ্যে ফের সহিংসতা, কারফিউ জারি