শিশু হাসপাতালের আগুন এসি থেকে লাগতে পারে : ফায়ার সার্ভিস
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৫:০০ পিএম | আপডেট: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৯:৩০ পিএম
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের হৃদ্রোগ বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আগুন এসির (শীতাতপনিয়ন্ত্রণের যন্ত্র) ত্রুটি থেকে লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
আজ শুক্রবার বিকেলে আগুন নেভানোর পর এ কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন।
মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এসি থেকে আগুন লাগতে পারে। তবে বিষয়টি তদন্তের প্রয়োজন আছে। এরপর বলা যাবে মূল কারণ কী?’
আইসিইউতে কোনো রোগী আটকে ছিল না জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, রোগীদের আগেই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। আইসিইউর ভেতরে প্রচুর ধোঁয়া ছিল। ভেতরে এসিসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশে আগুনও জ্বলছিল। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অক্সিজেন ছড়িয়ে পড়ায় আগুন নেভাতে সময় লেগেছে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, তারা আগুনের তথ্য পান বেলা ১টা ৪৭ মিনিটে। এর ১২ মিনিটের মাথায় হাসপাতালে পৌঁছান। আগুন নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। তবে আগুন ৪০ মিনিটের মধ্যেই নিভিয়ে ফেলা হয়।
শিশু হাসপাতালের বি-ব্লক ভবনের পঞ্চম তলায় শিশু হৃদ্রোগ বিভাগের আইসিইউতে আগুন লাগে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আইসিইউতে সাতজন রোগী ভর্তি ছিল। তাদের জাতীয় হৃদ্রোগ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘যেখানে আগুন লেগেছে, সেটা কার্ডিয়াক আইসিইউ। সেখানে ৭ জন রোগী ছিল। চিকিৎসকসহ অন্য যাঁরা কাজে ছিলেন, তাঁরা হঠাৎ করে একটু ধোঁয়া দেখেই সব রোগীকে বের করে নিয়ে আসেন। এই রোগীদের জাতীয় হৃদ্রোগে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে সব রোগী ভালো আছে।’
আগুন লাগার ঘটনায় রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিশু রোগীদের নিয়ে অভিভাবক ও স্বজনেরা দ্রুত হাসপাতালের নিচে নেমে আসেন। পরে তাঁরা হাসপাতালের এ-ব্লকের নিচে ও হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে শিশু রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। এতে অভিভাবকের কোলে থাকা শিশুদের কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউতে দ্রুত অনেক বেশি ধোঁয়া তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তাই ভেতরে কেউ ঢুকতে পারেননি। যার জন্য নিজেদের যে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা, সেটা ব্যবহার করা যায়নি। পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ডগুলোর অগ্নিনিরাপত্তা যাচাই করে দেখে চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একাধিক রোগীর স্বজনেরা জানান, কয়েক দিন আগেও হাসপাতালে আগুন লেগেছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এক রোগীর স্বজনের চুলার আগুন থেকে কাপড়ে আগুন লেগে গিয়েছিল। কর্তব্যরত নার্স ওই আগুন অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের মাধ্যমে নিভিয়ে ফেলেছিলেন। ওই ঘটনার সঙ্গে আজকের আগুনের কোনো সম্পর্ক নেই।
হাসপাতালের ২০০টির বেশি এসি গরমের শুরুতেই সার্ভিসিং করানো হয় বলেও জানান তিনি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউর প্রধান অধ্যাপক রিজওয়ানা রিমাকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটিতে মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদসহ, ওয়ার্ড মাস্টার ও নার্স এবং ফায়াস সার্ভিসের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন। কমিটি তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।
আরও পড়ুন
- অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৫
- টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষ, নিহত ৪
- পল্টনে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
- নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৭
- সাতক্ষীরায় ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- ধামরাইয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, হতাহত অর্ধশতাধিক
- দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, নিহত ১
- বগুড়ার শেরপুরে ট্রাকচাপায় দুই নারীর মৃত্যু