নতুন দামে মিলছে না ভোজ্যতেল
রবিবার, ৩ মার্চ, ২০২৪ ০১:৪৬ পিএম | আপডেট: রবিবার, ৩ মার্চ, ২০২৪ ০১:৪৬ পিএম
ভোজ্যতেলের (বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের) নতুন দাম শুক্রবার (১ মার্চ) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও প্রথম দুই দিনে তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী শনিবার জানিয়েছিলেন, আজ রোববার (৩ মার্চ) থেকে কার্যকর হবে নতুন দাম।
কিন্তু রোববার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন দোকান ঘুরে এবং সুপারশপগুলোর অনলাইনে প্রকাশিত মূল্যতালিকা থেকে দেখা গেছে, অধিকাংশই আগের দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। কোথাও কোথাও সয়াবিনের দাম কিছুটা কম রাখা হচ্ছে। বাজারে নতুন মোড়কের বোতলজাত সয়াবিন আসেনি, এমন অজুহাত দেখিয়ে অনেক বিক্রেতাই সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে আগের দামই নিচ্ছে।
তবে কোম্পানিগুলো নতুন দরের সয়াবিন বাজারে ছেড়েছে বলে দাবি করেছে। সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল।
সরকার সম্প্রতি বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী এখন প্রতি লিটার নতুন বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা টাকায় ও খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।
ঢাকার মালিবাগ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেতাদের বাধ্য হয়ে ১৭৩ টাকা লিটার দামেই বোতলজাত সয়াবিন কিনতে হচ্ছে। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের দামও ৮০০ টাকায় নামেনি। সে জন্য ৮৪৫ টাকায় তা কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু বিক্রেতাকে অবশ্য গায়ের দামের চেয়ে কিছুটা কম রাখতে দেখা যায়। খোলা সয়াবিন তেল এখন ১৪৯ টাকা লিটার দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে খোলা সয়াবিনের দাম ১৫০ টাকার ওপরে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘নতুন দরের সয়াবিন এখনো বাজারে আসেনি। তাই নতুন দাম কার্যকর হচ্ছে না। ডিলাররা এখনো পুরোনো দামের সয়াবিনই দিচ্ছে। দাম সামান্য করে কমাচ্ছে। তাতে আমরা আগের থেকে কিছুটা কম দামে ক্রেতাদের সয়াবিন দিতে পারছি।’
এদিকে, টিসিবির বাজারদরের প্রতিবেদনও বলছে, ভোক্তা পর্যায়ে এখনো সয়াবিন তেলের দাম কমেনি। ঢাকার বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৬৫ থেকে ১৭২ টাকায় এবং ৫ লিটারের বোতল ৮৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। টিসিবির হিসাবে, লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকায়।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, খোলা তেলের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, বাজার এখন তার নিচে আছে। বাজারে সরবরাহেরও সংকট নেই। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে খোলা তেলের সরকারি দাম কার্যকর হবে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে বাড়তি দামের মোড়ক লাগিয়ে সব সময় প্রস্তুত থাকে। কিন্তু কমানোর সময় ধীরগতিতে কমায়। এবার নতুন দাম কার্যকরের ঘোষণা বেশ আগেভাগে দেওয়া হলেও মিল থেকে ডিলার হয়ে এখনো নতুন দামের পণ্য আসেনি। সে জন্য ভোক্তা পর্যায়ে এখনো ভোজ্যতেলের দাম কমানোর সুবিধা পুরোটা মিলছে না।
প্রসঙ্গত, রোজার মাসে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) একটি বিশ্লেষণ বলছে, শুল্ক-কর কমানোর কারণে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানি ব্যয় লিটারে ৫ টাকার মতো কমার কথা। পাম তেলে প্রভাব পড়বে প্রায় সাড়ে ৪ টাকা। তবে সরকার শুধু সয়াবিন তেলের দাম লিটার ১০ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ দফায় বাজারে পাম তেলের দাম কমেনি।
আরও পড়ুন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ৫০ লাখ টন এলএনজি কেনার চুক্তি বাংলাদেশের
- দাম কমেছে সবজির, অস্বাভাবিক সয়াবিন তেলের বাজার
- সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও বেড়েছে মাছের দাম, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
- বছরের প্রথম ১১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা
- কাঁচা বাজারে স্বস্তি, চাল-মাছ-মুরগিতে আগুন
- রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্ক অপরিবর্তিত থাকবে : অর্থা উপদেষ্টা
- পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে নেই কোনো আগ্রগতি, চিঠি চালাচালি আর বৈঠকই সীমাবদ্ধ
- ওষুধসহ ৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ