1. »
  2. জাতীয়

গানম্যান পেলেন ২০ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৫:৪৮ পিএম | আপডেট: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৫:৪৮ পিএম

গানম্যান পেলেন ২০ জন

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিত্ব, সমন্বয়ক, সংসদ-সদস্য প্রার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে আন্দোলনের সম্মুখসারির কয়েকজনকে গানম্যান দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আত্মরক্ষার প্রয়োজনে ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশে সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ছয় নেতাসহ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা মোট ২০ জনকে গানম্যান দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের সূত্র জানায়, গানম্যান পাওয়া তালিকায় রয়েছেন—অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। এছাড়া গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনও গানম্যান পাচ্ছেন।

এদিকে একাধিক রাজনীতিক ও সংসদ-সদস্য প্রার্থী গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের জন্য সার্বক্ষণিক গানম্যান ও বাসভবনের নিরাপত্তায় সশস্ত্র পুলিশ সদস্য চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহম্মেদ সেখসহ আরও কয়েকজনের জন্য।

এর বাইরে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকা শহীদ ওসমান হাদির পরিবারকেও বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। তাঁর এক বোনকে অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিরাপত্তা, গানম্যান বা অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন রাজনীতিক আবেদন করেছেন। এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। অনেকেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন। রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি প্রায় ২৫ জন সরকারি কর্মকর্তাও অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন।

এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম বলেন, “যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের একজন অস্ত্রধারী রক্ষী দেওয়া হয়েছে। যারা তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে আছেন, তাদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

পুলিশের আরেক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাদের ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যাদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে গানম্যানের চাহিদা বেশি হওয়ায় সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই গানম্যান দেওয়ার ক্ষেত্রে বাস্তব সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারণ, অনেকেই শিক্ষার্থী, কেউ রিকশায় বা গণপরিবহনে চলাচল করেন। এসব ক্ষেত্রে গানম্যান দেওয়ার বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে। কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।”