বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের খালাসের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ ০২:৫৩ পিএম | আপডেট: বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ ০২:৫৩ পিএম
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের খালাসের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট ৫৯ পৃষ্ঠার প্রকাশিত রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সর্বস্মতিক্রমে ওই রায় দিয়েছিলেন।
আদালতে আপিলের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভুঁইয়া ও মাকসুদ উল্লাহ।
কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
রায়ের পর ১৫ জানুয়ারি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, যে মামলায় কিছুই ছিল না। সেই মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ ৫ বছর থেকে ১০ বছর করেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। সেই মামলার মধ্যে কোনো সারবত্তাই ছিল না। অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থা বলে কিছু ছিল না। ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে বলতো সেভাবে রায় হতো। আজকে মনে হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। রায়ে আদালত বলেছেন, আপিল ইজ অ্যালাউ (আপিল মঞ্জুর)। আরও বলেছেন, বিচারিক আদোলতের যে রায় দেওয়া হয়েছে, হাইকোর্ট বিভাগের যে রায় দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হলো। এবং আরও বলেছেন, যারা আপিল করতে পারেন নাই, তারেক রহমানসহ সবাইকে খালাস দিয়েছেন। এই প্রসিকিউশন ছিল ম্যালিসাস। একটা বিদ্বেষমূলক এবং প্রতিহিংসামূলক। কার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা? পুরো জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে। সারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা।
একইদিন দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান জানান, মোট চারটা আপিল ছিল। চারটাই মঞ্জুর করেছেন। হাইকোর্ট ডিভিশন এবং বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করেছেন। এবং সঙ্গে সঙ্গে যারা আপিল করতে পারেননি, তাদেরও (খালাস দিয়েছেন)। যেহেতু পুরো মামলাটাই বলেছেন-ম্যালিসাস প্রসিকিউশন (বিদ্বেষপূর্ণ কারর্যধারা)। তাই তারাও এ সুবিধা পেয়ে খালাস পেলেন। দুইজনের মধ্যে একজন তারেক জিয়া। আরেকজন কামাল সিদ্দিকী।
গত বছরের ১১ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে আপিলের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগ। পরে খালেদা জিয়া আপিল করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
একইসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
পরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া আপিল করেন। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট।
সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
আর পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া এবং ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল খারিজ করেন আদালত।
আরও পড়ুন
- ওবাইদুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
- সাংবাদিক আনিস আলমগীর ও অভিনেত্রী শাওনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
- আবু সাইদ হত্যার সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে হাসনাত আব্দুল্লাহ
- অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠন প্রক্রিয়া বৈধ : আপিল বিভাগ
- খুলনা আদালত চত্বরে দু'জন গুলিবিদ্ধ
- প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড
- পলাতক হাসিনার প্লট দুর্নীতিসহ তিন মামলার রায় আজ
- পলাতক হাসিনার প্লট দুর্নীতি মামলার রায় ২৭ নভেম্বর